মারণ ক্যান্সারকে হারিয়ে মিসেস ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ডওয়াইডের ফাইনালিস্ট তানিশা রায়

এভাবেও ফিরে আসা যায়। আসা সম্ভব। শরীরে মারণরোগ থাবা বসানোর পরেও জীবনের প্রতিটি চ্যালেঞ্জ জিতে পরে নেওয়া যায় শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট। সম্প্রতি সেটাই করে দেখালেন বেঙ্গালুরুর মডেল তানিশা রায়। ক্যান্সারের ছোবলকে হারিয়ে দিয়ে জীবনের মঞ্চে জিতে গেছেন তিনি।
ঠিক কী করেছেন তানিশা? অক্টোবর মাসে গ্রিসে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে হট মন্ডে মিসেস ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ডওয়াইড বিউটি প্যাজেন্ট 2019। সেই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী 25টি দেশের 40,000 প্রতিযোগীর মধ্যে থেকে যে প্রথম 172 জন প্রতিযোগীকে বেছে নেওয়া হয়েছে, তাঁদের জন্য তানিশা! এই মুহূর্তে আসন্ন সেই আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নিজের সেরাটা উজাড় করে দেওয়ার প্রস্তুতি চালাচ্ছেন তানিশা।
Tanisha Roy
জীবনটা কিন্তু মডেল হিসেবে শুরু করেননি তানিশা। গত বছরেও কর্পোরেট সেক্টরের ব্যস্ত চাকুরে ছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সময়েই ফার্স্ট স্টেজ ম্যালিগন্যান্ট টিউমারে আক্রান্ত হন তিনি। চিকিৎসার প্রয়োজনে স্বাভাবিকভাবেই চাকরি থেকে বিরতি নিতে হয়। কিন্তু অসুস্থতার কাছে আত্মসমর্পণ না করে এই সময়টায় মডেলিং করতে শুরু করেন তানিশা। চিকিৎসার ফাঁকে ফাঁকে মডেল হিসাবে শ্যুট করাও চলতে থাকে। একসময় চিকিৎসকেরা জানান, প্রাণ বাঁচাতে হলে একটা ম্যাক্রো ওপেন সার্জারি করতেই হবে তাঁকে। ঝুঁকি ছিল সেই সার্জারিতে, কিন্তু ঝুঁকিটা নিলেন তানিশা। অপারেশন সফল হল ঠিকই, কিন্তু গলা থেকে শুরু করে কান পর্যন্ত থেকে গেল বিরাট ক্ষত। ফলে সারাক্ষণ বিপুল এক পোস্ট-অপারেটিভ কেয়ারের মধ্যেই থাকতে হত তাঁকে। ‘‘খুব কঠিন ছিল সেই সময়টা, কিন্তু পরিবারের সবাই আমার পাশে ছিলেন। তাই সামলে ওঠাটা কঠিন হলেও অসম্ভব ছিল না। যে লক্ষ্যগুলোয় পৌঁছোনোর স্বপ্ন দেখছি, তা পূর্ণ করতে চাই,’’ বলছেন অসমসাহসী মেয়ে।
কিন্তু অপারেশনের বিশ্রী দাগটা তো থেকেই গেছে! অস্বস্তি হয় না? ‘‘বাঘিনীর শরীরে দাগ থাকবে না? ওই অপারেশনের দাগটা নিয়ে আমি গর্বিত, আমার সব দোষত্রুটি নিয়েই আমি নিখুঁত,’’ সপাটে জবাব দেন তানিশা। ক্যান্সারকে হারিয়ে দেওয়া, জীবনের যাবতীয় ওঠাপড়া তাঁকে ক্রমশ আরও শক্ত, আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। জীবনের সবচেয়ে কঠিন পর্ব পেরিয়ে এসে তানিশা জানেন, যত কঠিন পরিস্থিতিই আসুক, তার মোকাবিলা করতে তিনি পারবেন। সেই বিশ্বাস থেকেই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছেন তিনি। প্রতিদিন সুপরিকল্পিত ডায়েট আর ব্যায়ামের রুটিনের মধ্যে দিয়ে গড়ে তুলছেন নিজেকে। বলে দিচ্ছেন, ‘‘বিশ্বাসটাই আসল। আপনি যদি বিশ্বাস করেন আপনি পারবেন, তা হলে ঠিক পারবেন। অন্যরা কে কী বলছে তাতে কান দেবেন না, আপনি নিজেই অনন্য! অতীত নিয়ে বাঁচবেন না, তাতে আপনারই ক্ষতি। অতীত ভুলে বর্তমানটাকে আরও সুন্দর করে তোলার ক্ষমতা আপনার রয়েছে, সেটা বিশ্বাস করুন।’’
অসমসাহসী, মৃত্যুঞ্জয়ী তানিশাকে আমাদের কুর্নিশ!

Comments

Popular posts from this blog

Indians love entertainment: Meet Bros

Never Give Up